জলাতঙ্ক এবং তার টিকা সঙ্গে covid19:-
1885 সাল প্যারিস। বাড়ির সদর দরজার সামনে খেলা করছিল নয় বছরের ছেলে জসিম মিস্টার। জোসেফের মা মাদাম মিস্টার ব্যস্ত ঘরের কাজে। হঠাৎ ছেলের কান্নার আওয়াজ শুনে চমকে উঠলেন তিনি।তাড়াতাড়ি দৌড়ে গেলেন সদর দরজার সামনে। দৃশ্য দেখি অসাড় হয়ে গেল তার গোটা শরীর।
একটা কুকুর অদ্ভুত তার চোখের চাউনি মুখ দিয়ে লালা গড়াচ্ছে চাপা গর্জন এর সঙ্গে কুকুরটা সজোরে কামড়ে ধরেছে । জোসেফ যন্ত্রনয় কাতরাচ্ছে। কুকুরটাকে এক লাথি মেরে ফেলে দিলেন জোসেফের মা। কুকুরটার মুখ থেকে রক্ত রক্ত নিঃসৃত লালা ঝরছে। খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকে কুকুরটা ধীরে ধীরে চলে গেল।।
কুকুরটাকে চিনতে পেরেছেন মাদাম মিস্টার। এটা পাশের বাড়ির সেই পাগলা কুকুরটা ইতিমধ্যে দুজনকে কামড়েছে,দুজনেই ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে ডাক্তার বলেছেন জলাতঙ্ক শুধু সময়ের অপেক্ষা বাঁচার কোন আশা নেই। সেই কুকুরটাই কামড়েছে তার একমাত্র ছেলে জোসেফকে।
মাথা খারাপ হয়ে গেল।ছেলেকে নিয়ে ছুটলেন স্থানীয় ডাক্তারের কাছে একটাই আরজি ছেলেকে বাঁচিয়ে দিন।যোষেফের পায়ের ক্ষত ড্রেসিং করলেন ডাক্তাররা বললেন এই রোগের কোন ঔষধ নেই মৃত্যু আসবে দুসপ্তাহের বা খুব জ্বর হলে এক মাসের মধ্যে ভবিষ্যতকে মেনে নেয়া ছাড়া কোন উপায় নেই।
কাঁদতে কাঁদতে ডাক্তার এর হাতে পায়ে ধরলেন মাদাম মিস্টার কিছু একটা করুন কিছু একটা করে দেশকে বাঁচান।একটু চিন্তা করলেন ডাক্তারবাবু বললেন এখান থেকে একটু দূরে লুই পাস্তুর নামে এক প্রফেসর থাকেন শুনেছি তিনি জলাতঙ্ক রোগের টিকা আবিষ্কার করার চেষ্টা করেছেন আপনি তার সঙ্গে কথা বলুন।
জোসেফ কে কোলে নিয়ে ডাক্তারখানা থেকে মিরপুরের বাড়ির উদ্দেশ্যে ছুটলেন মাদাম মিস্টার দেখা করলেন পাস্তুরের সঙ্গে বললেন আমার একমাত্র ছেলে যেভাবে হোক বাঁচান
মাদাম মিস্টার কি অনেক বোঝালেন প্রস্তুত বললেন একথা সত্যি যে আমি জলাতঙ্কের টিকা আবিষ্কার করবার চেষ্টা করছি এবং আংশিক সাফল্য পেয়েছি জলাতঙ্ক কুকুরের স্পাইনাল করের টিস্যুকে ফরমালিন দিয়ে আংশিকভাবে অকেজো করে এই টিকা কুকুরের দেহে প্রয়োগ করে সাফল্য পেয়েছি এই টিকা কুকুরের শরীরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধ করতে সক্ষম।কিন্তু মানুষের শরীরে প্রয়োগ এখনো করা হয়ে ওঠেনি অর্থাৎ সৌমেন ট্রায়াল' এখনো হয়নি এর সফল হলে তবেই একমাত্র এটা মানুষের শরীর দেওয়ার উপযুক্ত বলে গণ্য হবে তার আগে নয়।
সবশুনে লুই পাস্তুরের সামনে জোসেফকে শুইয দিলেন মাদাম মিস্টার
।বললেন ওর উপরেই সৌমেন ট্রায়াল' করুন ওকে পাগলা কুকুরে কামড়েছে আজ না হোক কাল ওমর ভাই আপনার টিকার দৌলতে যদি বাঁচে।
পাস্তুর পড়লেন আতান্তরে একটা ন বছরের বাচ্চার উপরে ফিমেল ওইটুকু শরীর কি মারাত্মক রোগের টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সহ্য করতে পারবে।যদি টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জন্যই জসিম মারা যায় নিজের আত্মার তাকে কি জবাব দেবেন তিনি।
পাস্তুর পরামর্শ করলেন নিজের সহকারীদের সঙ্গে কথা বললেন জোসেফের বাবার সঙ্গে স্থির হল জোসেফের উপরেই প্রথম প্রয়োগ করা হবে পাথরের তৈরি টিকা
প্রয়োগ করা হলো পাস্তুর এবং তার সহকর্মীদের নেকনজর রইল নয় বছরের জসিক একদিন দুদিন কেটে গেল 30 টা ন জোসেফের শরীরে জলাতঙ্ক কোন লক্ষণ দেখা গেল না ফিমেল সাকসেসফুল আবিষ্কার হল জলাতঙ্ক টিকা
Person who sleeps on life safe the entire mankind.লুই পাস্তুরের আবিষ্কৃত ওই টিকা প্রয়োগ করে এরপর প্রায় 100 বছর ধরে প্রাণ বাঁচানো হয়েছে'কোটি কোটি মানুষের।কয়েক বছর আগে অব্দি ওইটাই ভারত সরকার প্রত্যেক সরকারি হাসপাতালে সাপ্লাই করত বিজ্ঞান কখনো থেমে থাকে না বাজারে চলে আসার পরে পাঁচটি ব্যবহার প্রায় বন্ধ হয়ে যায় কিন্তু ফাদার অফ মাইক্রো বায়োলজি নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে এবং চিরদিন লেখা থাকবে প্রথমবার তিনি দেখেছিলেন
যে বাড়িতে জোসেফের উপরেই হিউম্যান ডায়াল করা হয়েছিল সেই বাড়ি আজ মহীরুহ আকার ধারণ করেছে নাম পাস্তুর ইনস্টিটিউট দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানীরা এই ইনস্টিটিউটে কাজ করার জন্য মুখিয়ে থাকেন
কিন্তু সেই ন বছরের জসিম মিস্টার তার কি হলো?আপনি শুনলে অবাক হবেন তিনি বেঁচে ছিলেন 65 বছর বয়স অবধি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের তিনি ফ্রান্সের হয়ে যুদ্ধ করেছিলেন যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে লুই পাস্তুর ইনস্টিটিউটের কেয়ারটেকার পদে বহাল করেন আমৃত্যু তিনি পাস্তুর ইনস্টিটিউটের পাহারাদার ছিলেন
1946 সাল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ করেছে জমা নাৎসী বাহিনী প্যারিস শহরে হত্যালীলা চলছে পাস্তুর ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা পালিয়ে গেছেন নিজের স্ত্রী সন্তানদের নিরাপদ আশ্রয় দিয়ে পাস্তুর ইনস্টিটিউটের গিয়ে বসে আছেন 65 বছরের বৃদ্ধ তিনি পালিয়ে যাননি ইনস্টিটিউট একদিন তার প্রাণ বাঁচিয়ে ছিলো নরপিশাচদের ইনস্টিটিউটকে ছেড়ে দিয়েছে তার মন সায় দেয়নি।
বিশাল নাৎসি বাহিনী যখন পাস্তুর ইনস্টিটিউটের গেটের সামনে নিজের সার্ভিস রিভলবার তাদের দিকে তাক করলেন মিস্টার স্টপ।নাৎসিরা বৃত্তচাপের উপর ফায়ার করলোনা রাইফেলের কুঁদো তাকে ধরে বেধড়ক মারধর করল মার খেতে খেতে জোসেফ শুনলেন যে তার স্ত্রী সন্তানদের হাতে ধরা পড়েছেন ওই অবস্থাতে তিনি নারীদের অনুরোধ করেছিলেন 25 সমাধি টা যেন নষ্ট না করা হয় he saved millions of lives.
মার খেয়ে মৃতপ্রায় জোসেফ কোনমতে বাড়ি ফিরলেন বুঝলেন তার স্ত্রী সন্তানের বন্দী পাস্তুর ইনস্টিটিউট নাৎসিদের কবলে নিজের সার্ভিস রিভলবার নিজের কপালে ঠেকিয়ে ট্রিগার টেনে দিলেন তিনি
জোসেফের অনুরোধ মেনে নাৎসিরা পাথরের সমাধি নষ্ট করেনি স্ত্রী-সন্তান নাৎসিদের হারিয়ে শেষ অব্দি পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন।


Super
ReplyDeleteBest
ReplyDeleteJust
ReplyDelete